‘সাগর-রুনি হত্যায় সাবেক সরকার জড়িত’
বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় :
১১-০২-২০২৫ ০৫:১০:৩৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১১-০২-২০২৫ ০৫:১০:৩৮ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় সাবেক সরকার জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন রুনির ভাই নওশের আলম রোমান। এছাড়া মামলার তদন্তে বেশকিছু অগ্রগতি এসেছে বলে জানিয়েছেন বাদিপক্ষের আইনজীবী শিশির মনির।
আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তারা এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাগর-রুনির ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ।
তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে আইনজীবী বলেছেন, 'যতটুকু আমরা জানতে পেরেছি, বেশ কিছু ডেভেলপমেন্ট (অগ্রগতি) হাতে এসেছে। সময়ের ব্যবধানে এই ডেভেলপমেন্ট নিয়ে হাইকোর্ট বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন সাবমিট করা হবে।'
তিনি বলেন, 'অতীতে এই মামলাটিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে দেয়া হয়নি। বর্তমানে তদন্ত রিপোর্টে কিছু তথ্য-উপাত্ত এসেছে। অতীতে এই তদন্ত প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। আইনি পদ্ধতিতে তদন্ত চলতে দেয়া হয়নি।'
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতি খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ও রুনি এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ছিলেন।
ওই হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেছিলেন।
প্রথমে এ মামলা তদন্ত করেছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি।
পরে আদালত র্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু তদন্তের কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ অবস্থায় হাইকোর্টের নির্দেশে গত ২৩ অক্টোবর এ মামলার তদন্তে চার সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত বছরের ৪ নভেম্বর র্যাবের হাত থেকে পিবিআই ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব বুঝে নেয়। এরপর সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজনকে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তারা।
আইনজীবী শিশির মনির জানান, 'এটি চাঞ্চল্যকর এবং দুর্ভাগ্যজনক। ১৩ বছরেও এই মামলার তদন্ত শেষ করে রহস্য উন্মোচন করতে পারেনি।'
'আমি মনে করি, এটি রাষ্ট্রীয় লেভেলে বড় ধরনের ব্যর্থতার ফল। এই সরকার আসার পর হাইকোর্ট বিভাগের আদেশে উচ্চতর টাস্কফোর্স গঠিত হয়েছে। এই টাস্কফোর্স ৪ এপ্রিলের মধ্যে তাদের তদন্তের সারবত্তা পেশ করবেন।'
স্বল্পতম সময়ের মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তারা একটি গ্রহণযোগ্য তদন্ত রিপোর্ট আদালতের সামনে দাখিল করবেন বলে আশাবাদী এই আইনজীবী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'তদন্তের বিষয়টির সঙ্গে স্পর্শকাতরতা আছে। এক ধরনের গোপনীয়তা আছে। তবে যাদের এক্সামিন (জেরা) করা হয়েছে, তদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।'
'এছাড়াও অন্য মামলায় জেলে আছেন, এরকম ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলাপ করা হয়েছে। যারা কিছুটা বক্তব্য দিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগাযোগের ব্যাপারে তারা মুখ খুলেছেন।'
মামলাটি বিচারাধীন উল্লেখ করে শিশির মনির আরো বলেন, 'অতীতে উচ্চ পর্যায় থেকে এখানে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। এই উচ্চ পর্যায় চিহ্নিত করে তদন্ত রিপোর্টে দেখানো হবে। আপাতত সবটা বলা সমীচীন নয়।'
'আগের সরকার জড়িত'
রুনির ভাই নওশের আলম রোমান বলেন, 'তদন্ত তো আমরা বুঝি না। তারপরও সবকিছু দেখে কিছুটা আশার আলো দেখতে পাই।'
তিনি বলেন, 'আমরা সব সময় মনে করতাম যে আগের সরকারের সংশ্লিষ্ট কেউ বা সরকার স্বয়ং এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। কারণ যত ধরনের নাটক হয়েছে, ডিএনএ টেস্ট থেকে শুরু করে আমাদের হয়রানি এবং নানা সময় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী কথাবার্তা বলেছেন।'
নওশের জানান, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে কারো বেডরুম পাহারা দেয়ার দায়িত্ব তার না। এ কারণে তারা মনে করতেন, তৎকালীন সরকার বা তাদের সংশ্লিষ্ট কেউ এটার সঙ্গে জড়িত।
তার ভাষ্যে, 'সরকার আন্তরিক হলে ১২ বছর ধরে তদন্ত চলতো না। র্যাবের মতো একটা বাহিনী যারা তদন্ত প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত না...।'
তিনি বলেন, এতবার আশাভঙ্গ ঘটেছে, 'যার ফলে আমরা আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু পাচ্ছি না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা তদন্ত রিপোর্ট কী আসছে সেটা জানতে পারছি।'
পজিটিভ কিছু একটা শুনতে পাবো : মেঘ
মাহির সরওয়ার মেঘ বলেন, 'আগে তো কিছু হতো না। এখন তো দেখছি যে ওরা কাজ করছে। তো একটু হলেও আমরা আশাবাদী। আশা করা যাচ্ছে, পজিটিভ কিছু একটা শুনতে পাবো।'
সূত্র : ইউ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ সাইফুজ্জামান ও তারুণ্যের উৎসব উদযাপন কমিটির প্রধান ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দি
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin
কমেন্ট বক্স